অবিরাম বাংলা ২৪ঃ ফতুল্লার পাগলায় ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আশা নীরিহ সহজ সরল মানুষদের মনের বাসনা পূরন করার নামে চালিয়ে আসছে এ প্রতারনা। ফতুল্লার পাগলায় এলাকায় অবস্থিত পাগলনাথ রাম সীতা মন্দিরের মহারাজ চিন্ময় মহন্ত দীর্ঘদীন ধরেই এ ধরনের প্রতারনার সাথে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদীন ধরে এ ধরনের ভন্ড কবিরাজের তৎপরতা বেড়ে উঠায় ভুক্তভোগী রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে।
সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ফতুল্লার পাগলা এলাকায় মৃত শিবু দাস মহন্তের ছেলে চিন্ময় মহন্ত মন্দিরের ভিতর তার আস্তানা গড়ে তুলেছে। তার এ আস্তানায় দূর দূরান্ত থেকে শত শত নারী-পুরুষ আসছে প্রতিনিয়ত। এদের রোগ নির্মূলে দেয়া হচ্ছে তাবিজ, পানি পড়া, তেল পড়া, চিনি পড়া, চাল পড়া, ডাব পড়া, ঝাড় ফুঁকসহ হরেক রকম চিকিৎসা। ওসব ওষুধ বালিশের নীচে, গাছের ডালে, কোমরে, হাত-পায়ে বেঁধে রাখার নিয়ম করে দেন। এতে রোগীর অবস্থার ধরন বুঝে নগদ টাকাসহ খাসি, ছাগল, ভেড়া, মোরগ দাবী করে ভন্ড কবিরাজ। আবার রোগীর অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে প্রাইভেট চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে লাখ টাকার বাজেট দেন। পাগলার পাগলনাথ রাম সীতা মন্দিরের মহারাজ ভন্ড কবিরাজ চিন্ময় মহন্তের কাছে আসা সাবিনা ও হাসি নামের কয়েকজন নারী জানান, রোগ বালাই নির্মূলের জন্য অনেকেই এখানে আসে। তাই আমিও আসলাম। তার স্বামীর সাথে গড়মিল। তাই ৫ হাজার টাকা দিয়ে দাওয়া নিয়েছেন তিনি। ভোলা থেকে আসা কয়েকজন নারী জানান, তাদের এলাকা থেকে এক নারীর সমস্যা সমাধানের জন্য এখানে এসেছি। লোকমুখে জানতে পারি যে, নিঃসন্তান দম্পত্তির চিকিৎসা এ মন্দিরে করানো হয়। এ মন্দির থেকে জ্বল পড়া খেলে নাকি নিঃসন্তান দম্পত্তি সন্তান লাভ করতে পারেন। এ বিশ্বাস থেকেই এখানে এসেছি। এখনো চিকিৎসা নেয়া হয়নি। তবে, এখান থেকে তারা চিকিৎসা নিবেন। তাদের বিশ্বাস এ মন্দিরের মহারাজ চিন্ময় মহন্তের জ্বল পড়া খেলে তাদের দীর্ঘদীনের মনের বাসনা পূরন হবে। এলাকাবাসী জানান, একটি প্রভাবশালী মহলের শেল্টারে ধর্মীয় অনুভূতিকে পুজি করে ভন্ড কবিরাজ চিন্ময় মহন্ত সেজে অবাধে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার এ ভন্ডামী ভালো চোখে দেখছে না এলাকাবাসী। ভন্ডামী করে এখন সে বিলাসবহুল গাড়ি হাঁকিয়ে চলাফেরা করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী রোগী ও এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে পাগলাথ রাম সীতা মন্দিরের মহারাজ চিন্ময় মহন্ত জানান, কেউ যদি বিশ্বাস করে মন্দিরে আসে তাহলে আমরা তাদের সেবা দিয়ে আসছি। আমাদের পূর্ব পুরুষদের রীতিনীতি অনুয়ারী এ মন্দিরের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে আসছি। কারো পেট ব্যথা, কারো মাথা ব্যাথা কিংবা মনের বাসনা পূরনের জন্যই বাবা ভোলানাথের আর্শিবাদ নিয়েই আমরা এ সেবা প্রদান করে আসছি। আর আমাদের চেষ্টায় কারো সমস্যা সমাধান হয় আবার কারো হয় না। এর বিনিময়ে কোন ভক্ত যদি আমাদের কিছু দেন তাহলে আমরা গ্রহন করি। আর আমাদের কোন চাহিদা নেই।
Leave a Reply