স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকার দনিয়া, শনির আখরা. পলাশপুর ও নূরপুর এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ জাহিদ চৌধুরী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ৬০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় এলাকাবাসি ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে ।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৬০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে । সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, উক্ত সম্মেলনে ৬০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপিত প্রার্থী হিসেবে যারা বিভিন্ন মহলে দেঁৗঁড়ঝাপ চালিয়ে আলোচনায় আছেন তাদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা হাসমত, মো: আনোয়ার হোসেন ও সনি ভূষণ দত্তের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এরা বিগত দিনে এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কমবেশী সক্রিয় ছিলেন এবং চেনা মূখও বটে। কিন্তু হঠাৎ করে জাহিদ চৌধুরী ৬০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় এলাকাবাসি ক্ষুব্ধ ও চরমভাবে আতঙ্কিত বলে জানা গেছে । কেননা, জাহিদ চৌধূরী অল্প কয়েক বছর যাবত অত্র এলাকায় এসে তার সহযোগীদের নিয়ে চাঁদাবাজি সহ নানা ধরনের আপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । এছাড়া জাহিদ চৌধুরী এলাকার জামায়াত-বিএনপির নেতা কর্মীদের সাথে চলাফেরা ও বিশেষ সখ্যতা গড়ে তুলেছেন যা আওয়ামী পন্থী নেতাকর্মী সহ সাধরণ জনগণ সহজভাবে নিতে পারছেন না । বিশেষ করে ৬০নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো: শওকত, বিএনপি সমর্থিত ওয়ার্ড কমিশনার আনোয়ার মজুমদার, ৬১নং ওয়ার্ড কমিশনার মো: জুম্মন এর সাথে জাহিদ চৌধুরীর রেেয়ছে গভীর সখ্যতা, যা তার ফেসবুক আইডি সহ ছবির এ্যালবাম দেখলেই বুঝা যায় । নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহিদের এক ঘনিষ্ট বন্ধু জানান, ৬০নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো: শওকত হলো জাহিদ চৌধুরী মূল অর্থদাতা। জাহিদ চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হতে পারলে শওকত সহ বিএনপি পন্থীদের বিভিন্ন সুবিধা দিবেন মর্মে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে ধনাঢ্য শওকত উক্ত অর্থ দিচ্ছেন বলে জাহিদের ঐ বন্ধু জানান। জানা যায় আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাহিদ চৌধুরী ৬০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপিত প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে সিভি জমা দিবেন । কিন্তু ইতোমধ্যে জাহিদ চৌধুরী উক্ত পদ পেতে তার সিভির একাধিক কপি তদ্বিরের জন্য মহানগর সহ দলীয় বিভিন্ন নেতার নিকট জমা দিয়েছেন । নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহিদের এক ঘনিষ্টজন বলেন, সিভিতে তার নাম ও ঠিকানা ছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ অন্যান্য সাবেক রাজনৈতিক যোগ্যতার বিষয় গুলো সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন । তিনি নিজেকে ৬০নং ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে টোকাই হাবিবকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন মহলে দৌঁড় ঝাপ শুরু করেছেন । প্রকৃতপক্ষে জাহিদ চৌধুরী তার সিভিতে বিগত দিনে যে সময়ে তিনি ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ সহ সামাজিক যেসব র্ককান্ডে জড়িত থাকার কল্প কাহিনী রচনা করেছেন ঐ সময়ে তিনি দীর্ঘদিন একটানা বিদেশে অবস্থান করেছেন, যা তার পাসপোর্ট পরীক্ষা নীরিক্ষা করলেই বেরিয়ে আসবে । তার সিভিতে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়,তিনি তার পিতার কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের বিবরণ না দিয়ে দূর সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন যা কোনমতেই কাম্য হতে পারে না।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নূরপুরের জাহিদ চৌধুরী নিজেকে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী লিটন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সাংসদ মজিবুর রহমান নিক্সন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস এর নিকটাত্মীয় পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার সহ নানাবিধ অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে । চাঁদাবাজ জাহিদ তার ঘনিষ্ট সহযোগী দেশের বিভিন্ন থানার চার্জসীট ও য়ারেন্টভূক্ত আসামী দলীয় শৃখলা ভংঙ্গের দায়ে শ্রমিক লীগ থেকে বহিস্কৃত চাদাঁবাজ, জুয়ারু , মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী টোকাই হাবিবকে সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার রাস্তা প্রসস্থ ও মেরামত,গ্যাস লাইন সংস্কার,জেনারেটর ,ইন্টারনেট ও ডিস লাইন সংযোগ,বর্জ্য/ ময়লার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদাবাজি চাঁদাবাজি করে আসছে বলে জানা গেছে । সম্প্রতি শনির আখরা ও নূরপুর এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিলে এলাকাবাসি গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘœ করার দাবীতে গ্যাস অফিসে গিয়ে অনুরোধ জানালে জনস্বার্থ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সদয় হয়ে গ্যাস লাইন সংস্কার শুরু করলে জাহিদ চৌধুরী তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে লাইন সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেয় । এর ফলে অত্র এলাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গ্যাস সংকট আরো চরমে পৌছেছে বলে জানা গেছে । এলাকাবাসি জানান, আগে দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে অল্প গ্যাস পাওয়া গেলেও জাহিদ চৌধুরীর জন্য এখন চুলা জ্বলছে না, হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে । এলাকাবাসি অবিলম্বে জাহিদ চৌধুরীর শাস্তি সহ গ্যাস সংকটের পরিত্রাণের লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে ।
নব নির্বাচিত নূরপুর ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিক উদ্দিন আহম্মেদ শফি মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব রেদোয়ান বলেন, গত ১৫ আগষ্টে জাতীয় শোক দিবসে তারা এলাকার র্নিমাণাধীন ওয়ার্ল্ড টাচ ব্লিডিংএ নূরপুর ইউনিট আওয়ামী লীগের ব্যানারে দোয়া, সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠান ও গণভোজের আয়োজন করেন । উক্ত অনুণ্ঠানে থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগের অংঙ্গ সংগঠন সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন । কিন্ত জাহিদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের কোন পদে না থেকেও একই দিনে ও সময়ে এলাকায় বিশৃংখলা সৃস্টির লক্ষ্যে নূরপুর ইউনিট আওয়ামী লীগের নামে ব্যানার লিখে টোকাই হাবিবকে সাথে নিয়ে অনুষ্ঠান করার অপচেষ্টা চালালে এলাকাবাসি তা বয়কট করেন। তারা আরো জানান জাহিদের এই ধরনের কর্মকান্ডে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তির সৃস্টি হচ্ছে । তারা আরো বলেন,উক্ত বিষয়টি অতিশীর্ঘ দলীয় ফোরামে লিখিতভাবে জানাবেন । ইতোপূর্বে কোন ধরনের রাজনীতির সাথে জড়িত না থেকে জাহিদ চৌধূরী হটাৎ করে ওয়ার্ড সভাপতি নির্বাচিত হলে একদিকে সমাজে যেমন চাঁদাবাজি ও অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে উক্ত পদ প্রত্যাশী যোগ্য ও ত্যাগী কর্মীগণ প্রাপ্য পদ থেকে বঞ্চিত হয়ে দলে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। তাছড়া উক্ত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি এমনিতেই অনেক দুর্বল, বিএনপি সমর্থিত কমিশনার প্রার্থী নির্বাচিত আছেন । বিগত জাতীয় নির্বাচন ও সিটি নির্বাচনে নৌকা মার্কার ভোট ছিল হতাশাজনক । তাই যোগ্য ব্যক্তিকে ৬০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত না করা গেলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে নৌকার ভরাডুবি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকাবাসি সূত্রে আরো জানা যায় আওয়ামী লীগের কোন একটি মহলের বিশেষ তদ্বিরে চাঁদাবাজ জাহিদ চৌধুরীকে যদি অত্র ওয়ার্ড কমিটির কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত করা হয় তবে তারা তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন ।
Leave a Reply